প্রকাশ : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:৪৬
পি কে হালদারের মুক্তি: ভারতীয় কারাগার থেকে বেরিয়ে অজ্ঞাত গন্তব্যে
বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে আলোচিত পি কে হালদার প্রায় আড়াই বছর কারাবাস শেষে মুক্তি পেয়েছেন। গত মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে কলকাতার আলিপুর প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার থেকে তিনি মুক্তি পান।
|আরো খবর
কারাগার থেকে বের হয়ে পি কে হালদার সাংবাদিকদের বলেন, "আমি এখন কিছু বলব না। আমার আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে পরে সবকিছু জানাব।" এরপর তিনি একটি সাদা প্রাইভেটকারে চেপে কারাগারের এলাকা ত্যাগ করেন। তবে তার পরবর্তী গন্তব্য সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি।
জামিনের শর্ত:কলকাতার নগরদায়রা আদালত গত শুক্রবার শর্ত সাপেক্ষে ১০ লাখ রুপির ব্যক্তিগত বন্ডে পি কে হালদারের জামিন মঞ্জুর করে। সোমবার আদালতে সেই বন্ড জমা দেওয়ার পর প্রেসিডেন্সি কারাগারে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
জামিনে মুক্তির শর্ত অনুযায়ী, পি কে হালদারকে আদালতের নির্দেশ মেনে চলতে হবে এবং তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। তার আইনজীবী জানিয়েছেন, পি কে হালদার নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন।
অভিযোগের পেছনের গল্প:পি কে হালদারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ রয়েছে। অর্থপাচার আইনের মামলায় ২০২2 সালে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (ইডি) তাকে গ্রেপ্তার করে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ১০,০০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে তিনি ভারতে পালিয়ে যান। সেখানে ভুয়া পরিচয়ে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ভারতীয় গোয়েন্দাদের তদন্তে উঠে আসে, তিনি পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় সম্পত্তি কিনেছিলেন।
বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়া:পি কে হালদারের মুক্তি নিয়ে বাংলাদেশে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশের আর্থিক খাতের জন্য এটি একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত এমন একজনের মুক্তি ভবিষ্যতে তার বিচারের প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পি কে হালদারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে এবং তাকে ফেরত আনতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা হবে।
অজ্ঞাত গন্তব্য:পি কে হালদারের কারাগার থেকে মুক্তির পরপরই তার গন্তব্য সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য জানা যায়নি। তবে তার আইনজীবী জানিয়েছেন, পি কে হালদার আপাতত কলকাতাতেই অবস্থান করবেন।
বাংলাদেশ ও ভারতের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো তার ওপর নজরদারি চালাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।